ব্লগার থেকে বন্ধুত্ব, অতঃপর তোমারে লেগেছে এতো যে ভালো.........২
লিখেছেন লিখেছেন আওণ রাহ'বার ৩০ আগস্ট, ২০১৫, ০৩:৩৭:২০ দুপুর
তৌহিদুল ইসলাম তানিনভাইয়ার সাথে আমার পরিচয় টুডে ব্লগেই! বিডিটুডের কাছে আমি বড় কৃতজ্ঞ এজন্য যে, বিডিটুডের মাধ্যমে আমি পেয়েছি অনেক দ্বীনি ভাই - বোনের সন্ধান! যারা আমাকে ভালোবাসেন শুধু এক আল্লাহর জন্যই এবং আমিও তাদের ভালবাসি এক আল্লাহর জন্যই! মানুষের ভালোবাসার এ প্রাপ্তি সত্যিই অনেক বড় অর্জন! ব্লগার সাজিদ আল সাহাফের পোষ্টে আমার মনের ব্যাকুলতার প্রকাশ!
ব্লগার সাজিদ আল সাহাফের পোষ্টে আমার মনের ব্যাকুলতার প্রকাশ!কিছু প্রাপ্তি তৃপ্তির অশ্রু হয়ে নামে নেত্রে...!!!"
ব্লগে বিভিন্ন কমেন্টস এর মাধ্যমে আমাদের মধ্যে সম্পর্কটা নিবিড় হয়ে যায়! বিভিন্ন দুষ্টু মিষ্টি কমেন্টসতো লেগেই থাকতো!
ব্লগার বৃত্তের বাইরে আপু ঘটকালি করার জন্য কমেন্টস করেছিলেন সেখানে অনেক অবিবাহিত ছেলে ব্লগাররা লাইন দিয়েছিলেন! সে লাইনে সবার শেষে নাম দিয়েছিলেন আমাদের তানিন ভাই! ভাইয়া সিরিয়ালটা পরে দিলেও বিয়েথা কিন্তু আগেই সেড়ে ফেলেছেন।
পোষ্টটি মূলত ভাইয়ার বিয়ে এবং কিছু স্মৃতি নিয়ে!
ব্লগ থেকে পরিচয় লুকিয়ে ফেসবুকে সম্পর্ক অতঃপর ভাইয়ার অফিসে যেয়ে ভাইয়ার সাথে আমার দেখা করা! ভাইয়ার সাথে আমার দেখা হলো! কথা হলো পরিচয় হলো! সে কিন্তু আওণকে চিনিলোনা! আমি কিন্তু ভাইয়ার সাথে লুকোচুরি খেলতে লাগলাম। প্রবল উত্তেজনা বিরাজ করছিলো আমার মাঝে, যে সব ঝাড়িঝুড়ি ফাঁস করে দেই! কিন্তু হলোনা প্রবল উত্তেজনা দাফন করে ব্লগীয় পরিচয় গোপন থাকলো! আমার কাছে টম এন্ড জেরী খেলা ভালোই লাগছিলো! এরপড় থেকে আমাদের প্রায় ফোনে দীর্ঘ সময় ধরে কথা হতে লাগলো সম্পর্কটা গাঢ়ো হতে লাগলো; হঠাৎ একদিন ফোনে ভাইয়াকে বলে দিলাম আমিই টুডে ব্লগের আওণ!!!!! ভাইয়া নির্বাক এবং নিস্তব্ধ হয়ে গেলেন আমার মনে হলো ভাইয়ার হাত কাঁপছে কন্ঠ ভাঙাভাঙা হাওয়ায় ভেসে আসছে!
অতঃপর বন্ধুত্বের পথচলাঃ!
ভাইয়ার সাথে বিভিন্ন কমেন্টস এ কতশত খুনসুটি ফোনে কতকথা কথাকত! আবারো দেখা কতযায়গায়! কতকথা কত ঘন্টা কতসময়! একসাথে কতকাপ "চা" আর তার সাথে কতকত "টা"।
বিয়ের পর্বঃ এবার ভাইয়ার পেছনে লাগলাম! বিয়ে! বিয়ে!! এবং বিয়ে!!! ভাইয়ার কান ঝালাপালা করে দিলাম!
বিয়ের দাওয়াত,
অতঃপর চলে আসলো ভাইয়ার বিয়ের সময়!
ভাইয়া আমাকে ফোন করে বললেন আগামি অমুক শুক্রবার বিয়ে!!!! তোমাকে যেতে হবে আমার সাথে! ইয়া আল্লাহ কিভাবে কি করি?! বড় ভাইয়াদের সাথে পরামর্শ করে ঠিক করলাম ইনশাআল্লাহ যাবোই!
বিয়ের চিঠি,
বিয়ের পূর্বে শ্বশুড়ের কাছে লিখা চিঠি! অবিবাহিত ভাইয়ারা চিঠিটা সংগ্রহ করতে পারেন! চিঠিটার লিংক হলো এইযে,
হবু শ্বশুরের নিকট পত্র
একদিনের মুসাফির,
মুসাফির হতে ভালোই লাগে আমার ইশশশ আমাল কমে যায় জোহরে মাত্র দুরাকাত পরেই তৃপ্তির ঢেকুর তোলা যায়! আদত ফাঁকিবাজতো!!!
শুক্রবার বাদ ফজর রওয়ানা হলাম মিরপুর থেকে যাত্রাবাড়ী হয়ে ভাইয়ার বাড়িতে, ভাইয়ার বাড়ী থেকে মিষ্টি নিয়ে রওয়ানা হলাম কনের বাড়িতে।
প্রাপ্তির আনন্দ যখন আমি বিশেষ কেউ! সত্যিই এক অনন্য অনূভুতি!
মা বাবা ছোট ভাই ছিলেন আর ছিলাম ভাইয়ার ঘনিষ্ঠ বন্ধুসহ আমরা ৫/৬ জন! বিয়ের দিন ভাইয়া আমাকে বাক্সের বাইরে বইটা উপহার দিলেন! আর আমি ভাইয়াকে দিলাম আতর!
আমরা সকালে রওয়ানা হলাম পেরেশানিতে ছিলাম জুমুআ নিয়ে তবে আলহামদুলিল্লাহ কনে এলাকার মসজিদে পৌছে জুমুআর নামাজ পড়লাম! এবারের জুমুয়াটা ছিলো আমার মত ফাঁকিবাজ এর জন্য স্পেশাল! দু রাকাত পড়েই সব মাফ! তৃপ্তির ঢেকুর মু হা হা হা হা।
খুব দ্রুতই বিয়ে হলো! খুৎবা হলো!! বেটা কবুল বলতে দেরি করলোনা!
তবে একটা বিষয় বলার মত সেটা হলো কবুল বলার পর মুনাজাতে ভাইয়া ঢুকরে ঢুকরে কেঁদে উঠলেন! ভাইয়ার ঘনকালো দাড়ি বেয়ে অশ্রু গড়িয়ে পড়তে লাগলো!
এ অশ্রুর নাম কি দেয়া যেতে পারে?
সুখের? না দুঃখের?? নাকি শোকরের? না সবরের?!!
বিয়ে বাড়ির হালচাল,
সত্যিই একটি মুসলিম পরিবারের বিয়ে এমনই হওয়া উচিত! কোন গেট সাজানো নেই! জুতা চুরি নেই! নেই কোন না মাহরাম মহিলার উৎপাত! নাই দেনমোহর এর দরবার, নাই গানবাদ্য, নাই কোন রেকর্ডিং অথবা নাই কোন অশ্লিলতার প্রশ্রয়।
পাঠক বিয়ের চিঠিটা পড়লেই আপনি পেয়ে যাবেন হালচাল কি হয়েছিলো!?
খাই খাই খাই দাই,
ইশ্ এতসময়ে আসলো খাওয়া দাওয়ার পালা; সবজি, আচার, মুরগি, গরু, খাসি, ডাল, কোমল পানীয়, মিষ্টি এবং অন্যান্য খাবার! সবচেয়ে বেষ্ট লেগেছিলো খাওয়ার পরে টকদই! রান্নাটা হেভি হয়েছিলো শুধু খাওয়া দাওয়া নিয়েই তিনটি পোষ্ট লেখা যাবে, তাই সংক্ষিপ্ত ভাবে লিখলাম!
আমরা ৪টার কিছু পরে রওয়ানা হলাম কনেকে নিয়ে! আহ! কনের ভাইয়েরা সে কি কান্না! সে কি অনূভুতি! ইশশসসসস আমার যদি একটা বোন থাকতো শেষ বিদায়ে আমিও যদি এভাবে কাঁদতে পারতাম!? সবার সেকি কান্নার রোল।
মঞ্জিলে ফিরে চলো হে মুসাফির,
আমরা রওয়ানা হওয়ার পর রাস্তায় গাড়ি থামিয়ে আসর এর নামাজ আদায় করলাম! রে ফাঁকিবাজ ফাঁকিদিতে পারিলাম না! কারন ওযু করে যাওয়ার পর দেখি কেবল জামাত শুরু হলো কি আর করার? জামাতে নামাজ আদায় করার পর আবার রওয়ানা!
ব্যাচেলর তানিন ভাই গেলেন বিবাহিত হয়ে আসলেন আমিও গেলাম কিন্তু আমিতো সেই অবিবাহিত রইলাম!
আমরা একদল মুসাফির ফিরে আসছি আর মনে দোলা দিচ্ছে! আমি কোথায় ছিলাম এখনও বা কোথায়? একটু পরে বা কোথায় থাকবো? সত্যিই এ বিয়েতে দাওয়াত পাওয়া আমার তাকদ্বীর! আর এ ভালোবাসা মহান রব্বুল কারীমের দান।
এই ভালোবাসাকে কবুল করো ইয়া রহমান!
আরেকটি সূর্যাস্ত চলে যাচ্ছে আমার জীবন থেকে মনে হচ্ছিল আজকের সূর্যাস্তটা আমার জীবনের অন্যতম শ্রেষ্ঠ একটি সূর্যাস্ত! হে মুসাফির"" তোমার জীবনের শেষ সূর্যাস্তের জন্য তুমি কি প্রস্তুত?
কৃতজ্ঞতাঃ
বৃত্তের বাইরে আপু!
ব্লগার থেকে বন্ধুত্ব, অতঃপর তোমারে লেগেছে এতো যে ভালো.........১
বিষয়: বিবিধ
২০৩১ বার পঠিত, ৩৬ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
০ মেয়েরা বিয়ের আগে যা কাঁদবার কেঁদে নয়ে । ছেলেরা কাঁদে বিয়ের পর থেকে ।
নবদম্পতির জন্য দোয়া চাই।
শুকরিয়া ভাইয়া
ইয়া আল্লাহ! কেউ খোঁচা দেয়নিতো!?
আমাদের হতভাগা ভাই অন্তত আট মিনিট কেঁদেছেন।
কেউতো মেয়ে দেয়না তাড়পড়ও বিয়ে করে ফেলে দেবো না না তা হবেনা! বিয়ে করে প্যাকেট করে রেখে দেবো
ধন্যবাদ ভাইয়া!
ভাই আসেন বুকে কোলাকুলি করে কষ্টটা কমাই
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ
মা-শা আল্লাহ
দারুন সম্পর্ক, যুগ যুগ টিকে থাক।
জাযাকাল্লাহ খাইর
আমীন আপনার দোয়ায় ভাইয়া।
শুকরিয়া অনেক অনেক
আপনাকেও অনেক শুকরিয়া।
সত্যিই আমার দেখা একটা অন্যতম সুন্দর এবং শালীন বিয়ে!
হামমমম সব ভাইয়েরা বোনের বিয়েতে এভাবে কাঁদে বুঝি
আপনার জন্যও খুব দোয়া রইলো আপু।
মাহবুবা সুলতানা লায়লা লিখেছেন :
আ মী ন !!!!!
এবং দোয়াকারী(দে)র জন্যও সর্বাঙ্গীন কল্যাণের দোয়া! আ মী ন !!!!!
আপনার দোয়ায় আমিন।
নানা ভাইয়ার জন্যও অনেক দোয়া রইলো সাথে হাতুড়ি বোনাস ফ্রি
আপনি লিখেছেনঃ
শুক্রবার বাদ ফজর রওয়ানা হলাম মিরপুর থেকে যাত্রাবাড়ী হয়ে ভাইয়ার বাড়িতে, ভাইয়ার বাড়ী থেকে মিষ্টি নিয়ে রওয়ানা হলাম কনের বাড়িতে।
ভাইয়ার বাড়িতে কি মিস্টি পাওয়া যায়!? যদি হ্যাঁ হয় আমাদের দাওয়াত দেন, আমরা মিস্টি খুবই পছন্দ করি।
ধন্যবাদ।
হামমমম তানিন ভাইয়ের ঘড় আপনাদের জন্য খোলা!
মিষ্টি ছিলো পাশের দোকানেই.....
আরো একটি কথা ওনার ঘরেতো মিস্টি নেই..... মিস্টিতো পাশের দোকানে!!
হামমমম ওনার ঘড়েই মিষ্টি পাওয়া যাবে! নো প্রবলেম তানিন ভাইয়ের ঘড়ে মিষ্টি পাওয়া যায়! ভাবী আর বাবুকে নিয়ে আসবেন কিন্তু!
অনেক ধন্যবাদ।
মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া।
ভাইয়াকে না দিয়েই খেয়ে ফেললাম!
মন্তব্যের জন্য
জাজাকাল্লাহ শ্রদ্ধেয় আবু জারীর ভাইয়া!
আমার লিখার অনুপ্রেরনাও বলা যেতে পারে!
সেখানে স্পেন আর ইটালি এর ঘটনা শুনবেন!
আফসোস পূর্বের কমেন্টসগুলো সেখানে নেই!
...
...
...
...
...
...
...
...
...
...
...
...
...
...
...
...
...
...
...
খুঁজেই তো পাচ্ছি নাহ!
সকালেই ডিউটির শেষের দিকে পড়েছিলাম সুন্দর আলেখ্যটা!
ভাল লেগেছে বলতেই হয়!
অনেক অনেক ধন্যবাদ!
অপেক্ষায় রইলাম আরেকটি সূর্যাস্তের! যে সূর্যটা অস্ত যাবে কাহাফ ভাইয়ার সাথে!
ভালোবাসি ভালোবাসি
এক মহান রবের তরে!
জাজাকাল্লাহ ভাইয়া
ভাল রাখুন সব সময় আপনাদের কে আল্লাহ তায়ালা-এই দুয়া আমার!!
আজকের জোনাকির আলো আমার জন্য যে ন আ স মা নে র আলোক-সান্ত্বনা। জোনাকির আলোকসজ্জার 'কারিগর' যেনো বলছেন-
দেখো, নিভে গিয়ে জ্বলে ওঠে জোনাকির আলো; তবু কেন হতাশায় ভঙে পড়ো তুমি হে মুসাফির! তোমার জীবনেও, হতাশার অন্ধকার রাতেও আছে আমার জোনাকির আলো।
যতদিন তুমি আমায় ডাকবে, তোমার চলার পথে আমার জোনাকির আলো জ্বলবে।"
দেখুনতো দিলকা তরপ দূর হয় কিনা!
হৃদয়ের মিনতি হৃদয়কে স্পর্শ করে!
জাজাকাল্লাহ
মন্তব্য করতে লগইন করুন